আমরা ছোট থেকেই জেনে আসছি একটি গাছ একটি প্রাণ। আমাদের জীবনে গাছের ভূমিকা আমরা কেউই অস্বীকার করতে পারিনা। সত্যিই এই বিষ্ময়কর পৃথিবীতে এমন কিছু গাছ আছে যা আমাদের জীবন বদলে দিতে পারে। যে সকল গাছ তাদের অবিশ্বাস্য উপকারিতা দাঁড়া দৌড়ঝাঁপ ভরা আমাদের জীবনে আমাদেরকে সবার থেকে এগিয়ে রাখে , তাদের মধ্যে অন্যতম হলো অ্যালোভেরা। যাকে আমরা বাংলায় ঘৃতকুমারী নামে চিনি। অনেকটা আনারস গাছের মতো দেখতে এই গাছ বর্তমানে প্রায় প্রত্যেক বাড়িতেই ছাদে কিংবা বাগানে লক্ষ্য করা যায়। ঘৃতকুমারী ত্বকের পরিচর্যা থেকে শুরু করে মারাত্মক কিডনির, রোগ হৃদ রোগ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
উপকারিতা - অ্যালোভেরার মধ্যে প্রায় 250 রকমের পুষ্টিগুণ আছে। ক্ষুধামন্দা দূর করতে, শরীরের ইমিউনিটি ক্ষমতা বাড়াতে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে এবং রক্তে হিমোগ্লোবিন এর সমতা বজায় রাখতে অ্যালোভেরার জুস অনবদ্য পথ্য হিসেবে কাজ করে। কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ন্ত্রণে অ্যালোভেরার জেল খুবই উপকারী।
তারুণ্যকে ধরে রাখতে, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে, মানসিক চাপ কমাতে, চুলের সুস্বাস্থ্য, চুল পড়া নিয়ন্ত্রণ করতে, মাথাকে ঠান্ডা রাখতে, স্মৃতিশক্তি বাড়াতে, ক্লান্তি দূর করতে, যেসকল লোকেদের এলার্জি আছে এলার্জি দূর করতে, অ্যালোভেরা সাহায্য করে । সেক্স ক্ষমতা বাড়াতেও অ্যালোভেরার ব্যবহার দেখা যায়। এমনকি ক্যান্সার প্রতিরোধেও অ্যালোভেরার বিশেষ গুণ আছে বলে আধুনিক বিজ্ঞানীরা দাবি করেন। এক কথায় বলতে গেলে বলা যায় নিয়মিত অ্যালোভেরার সেবন আপনাকে যেমন সুস্বাস্থ্যের অধিকারী করবে তেমনি আপনাকে সম্পদশালীও করবে। তাই বাড়িতে অবশ্যই অ্যালোভেরা গাছ চাষ করুন ও নিয়মিত সেবন করুন। এতে আপনি অ্যালোভেরার সংস্পর্শে থাকবেন এবং অ্যালোভেরার গুনগুন আপনাকে সমৃদ্ধ রাখবে। আবার জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুযায়ী যদি একটি অ্যালোভেরা গাছ আপনি বাড়ির উত্তর কিংবা পূর্বদিকে লাগিয়ে থাকন তাহলে নানান রকম ক্ষতির হাত থেকে বাড়ি রক্ষা পায় ও বাড়িতে সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধি বজায় থাকে।
সাবধানতা - অ্যালোভেরা ব্যবহারের সময় কিছু সতর্কতা অবশ্যই মনে রাখবেন না হলে কিন্তু অ্যালোভেরা আপনার জীবনে অনেকটাই ক্ষতি করে দিতে পারে। বাগান থেকে এলোভেরা গাছের উত্তোলনের পরে দেখবেন অ্যালোভেরা থেকে এক রকমের হলুদ রস বেরোয় এটাকে বলে ALO LATEX। আমাদের শরীরের পক্ষে এই হলুদ রস খুবই ক্ষতিকারক। তাই অ্যালোভেরা বাগান থেকে তোলার পর এক ঘন্টা দেড় ঘন্টা রেখে দেবেন যাতে সব হলুদ রস বেরিয়ে আসে। তারপর অ্যালোভেরার ব্যবহার করবেন। অ্যালোভেরার জেল আপনার ত্বকে লাগালে যদি ইচিং জাতীয় কোন কিছু হয় তাহলে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকুন।